২৯ এপ্রিল ২০২৫ - ২৩:২৬
Source: Parstoday
ফ্রান্সের মসজিদে ঢুকে নামাজিকে হত্যা, অভিযুক্ত ব্যক্তি ইতালিতে আটক

দক্ষিণ ফ্রান্সের একটি মসজিদে একজন নামাজীকে হত্যার অপরাধে জড়িত থাকা এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে ইতালির পুলিশ।

দক্ষিণ ফ্রান্সের একটি মসজিদে প্রবেশ করে নামাজি এক ব্যক্তিকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে ইতালির পুলিশ। এর আগে ফরাসি কর্তৃপক্ষ ওই হত্যাকাণ্ডকে ‘ইসলামবিদ্বেষী হামলা’ এবং ‘ঘৃণাজনিত অপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

সোমবার আল-জাজিরা জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি রোববার রাতে ইতালির ফ্লোরেন্সের কাছে একটি থানায় আত্মসমর্পণ করেন। এর দুই দিন আগে তিনি ফ্রান্সের গার্দ অঞ্চলের লা গ্রাঁদ কোম্বে শহরের একটি মসজিদে হামলা চালান। হামলায় নিহত ব্যক্তি মালির নাগরিক ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ফ্রান্স জুড়ে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠে।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০০৪ সালে জন্ম নেওয়া ওই হামলাকারীর অতীতে কোনো অপরাধের রেকর্ড ছিল না। হামলার পর তিনি ইতালিতে পালিয়ে যান এবং সেখানে আত্মসমর্পণ করেন।

গার্দ অঞ্চলের আলে শহরের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদেল করিম গ্রিনি জানিয়েছেন, পুলিশ সন্দেহভাজনকে অনুসরণ করছিল এবং দাবি করেছিল, তাঁকে গ্রেপ্তার করা সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

গ্রিনি বলেছেন, ‘প্রাথমিকভাবে এটিকে ইসলামবিদ্বেষী হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।’ তবে তদন্তকারীরা হামলাকারীর ‘মৃত্যুর প্রতি মোহ’ সহ অন্যান্য সম্ভাব্য উদ্দেশ্যও খতিয়ে দেখছেন।

গত শুক্রবার হামলার পরই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তীব্র অভিযান শুরু হয়। জানা গেছে, হামলার মুহূর্তের ভিডিও অভিযুক্ত নিজের ফোনে ধারণ করেছিলেন এবং পরে তা অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। সিসিটিভি ফুটেজে হামলাকারীকে আল্লাহর প্রতি অবমাননাকর কথা বলতে শোনা যায়, এরপরই সে হামলাটি চালায়।

গ্রিনি জানিয়েছেন, ফ্রান্স শিগগিরই সন্দেহভাজনকে ইতালি থেকে প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া শুরু করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে যত দ্রুত সম্ভব ফেরত আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ওই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘ফ্রান্সে ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে ঘৃণা ও বর্ণবিদ্বেষের কোনো স্থান নেই। ধর্মীয় স্বাধীনতা অমোচনীয়।’

ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু ঘটনাটিকে সরাসরি ‘ইসলামবিদ্বেষী হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন। প্যারিসের গ্র্যান্ড মসজিদ কর্তৃপক্ষ নিহত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেছে। স্থানীয়ভাবে তাঁর নাম আবু বকর বলে জানা গেছে। তিনি হামলার আগে মসজিদ পরিষ্কার করছিলেন। তাঁর বয়স ছিল বিশের কোঠায়।

নিহতের স্মরণে এবং মুসলিম-বিরোধী সহিংসতার প্রতিবাদে লা গ্রাঁদ কোম্বে ও প্যারিসে একাধিক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন।

উল্লেখ্য, ফ্রান্সে ইউরোপের সবচেয়ে বড় মুসলিম জনগোষ্ঠী বসবাস করে। দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ মুসলিম।

342/

Your Comment

You are replying to: .
captcha